আমাদের দেশে ‘সাইবার ক্রাইম কো-অর্ডিনেশন সেন্টার’ এর তথ্য অনুযায়ী ২০২৪ সালের মে’ মাসে প্রতিদিন গড়ে সাত হাজারটি সাইবার ক্রাইম নথিভুক্ত হয়েছে। যা ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের তুলনায় ৬০.৯% বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই অভিযোগের মধ্যে ৮৫% অনলাইনে আর্থিক প্রতারণা এবং জালিয়াতি। ইদানিং কালে অল্প দিনে বেশি টাকা ফেরত এর লোভ দেখিয়ে শুরু হয়েছে ফান্ডিং জালিয়াতি।সর্বস্ব হারাচ্ছেন বেশিরভাগ অবসর প্রাপ্ত মানুষেরা।
অন্যদিকে সাইবার থানা গুলো প্রচন্ডভাবে সক্রিয় হওয়ার ফলে, সাইবার প্রতারণার চক্র গুলো খুব তাড়াতাড়ি ধরা পড়ে যাচ্ছে। যার ফলে, অভিযোগের সংখ্যা বাড়ছে। তবে ইদানিং কালে সামাজিক মাধ্যমে টোপ দেওয়া হচ্ছে যে, ১০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করলে ,পনের দিনে কুড়ি হাজার টাকা পর্যন্ত ফেরত পাওয়া যাবে। কখনো আবার ২ হাজার থেকে ৫হাজার টাকা বিনিয়োগ দিয়েও শুরু হচ্ছে। এইভাবে বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়তে বাড়তে একটা সময়, সেটা কয়েক লক্ষতে গিয়ে পৌঁছাচ্ছে। আর এই বিনিয়োগের ফাঁদে পড়ছে বিশেষ করে অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা। সে যে কোন বয়সের হতে পারে।
যাদবপুরের এক প্রখ্যাত ইঞ্জিনিয়ার, দীর্ঘদিন বিদেশে থেকে ফিরে আসার পর, তিনি সোশ্যাল মাধ্যমে এইরকম একটি টোপ গিলে ফেলেন। ভেবেছিলেন দেশে ফিরে টাকা ডবল করে দিব্যি কাটিয়ে দেবেন বাদ বাকি জীবনটা। সেটা আর হয়নি।তিনি ওই প্রলোভনে ৫৯ লক্ষ টাকা প্রতারকদের হাতে প্রতারিত হয়েছিলেন। যদিও পরে কিছু টাকা উদ্ধার হয়েছিল।।
রাজ্য সাইবার পুলিশের এক আধিকারিক জানান, যে যেভাবেই অনলাইন প্রতারণা করুক না কেন? তাকে কোন না কোন ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে টাকাটা নিতে হয়। সেক্ষেত্রে সেই অপরাধীকে চিহ্ন চিহ্নিত করাটা খুব সোজা হয়ে পড়ে। কিন্তু কঠিন বিষয় হল, একজন সাইবার প্রতারক ১০ লক্ষ টাকা প্রতারণা করার পর। সে যে একাউন্টে টাকাটা নিল। সেই একাউন্টে টাকাটি না রেখে ২০০ থেকে ২৫০ টি একাউন্টে টাকাটা পাঠিয়ে দিল। এখানেই মজা। ওই ২৫০ জনকে ধরতে গিয়ে কিংবা খুঁজতে গিয়ে পুলিশের অন্যান্য মামলা গুলি বিলম্বিত হচ্ছে।এছাড়াও অনেক বেশি সময় লেগে যাচ্ছে।তারপর রয়েছে বিদেশে বসে প্রতারণা। বিদেশের পুলিশকে জানিয়ে কোন ভাবে উত্তর পাওয়া যায় না। এবং সেখানে গিয়ে হঠাৎ করে গ্রেফতার করেও আনা যায় না। ইদানিং কালে ভারতীয় ছেলেদের কম্বোডিয়া, লাওস এইরকম দেশে নিয়ে গিয়ে, শুরু হয়েছে অনলাইন প্রতারণার ব্যবসা। সমস্ত দিক দিয়েই সাইবার থানা গুলির তদন্তকারীরা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। তবুও তারা প্রতারকদের ধরতে অনেকটাই সক্ষম। কিন্তু প্রতারিত টাকার সম্পূর্ণটা উদ্ধার হচ্ছে না অনেক সময়, দাবী তদন্ত কারীদের।