গতকাল আলিপুর আদালতে ফাঁসির সাজা ঘোষণা হল।কলকাতা পুলিশ কি বদলা নিল!সিবিআই!

Spread the love

 স্টাফ রিপোর্টার : ঠিক ১৭ মাসের মাথায় ফাঁসির সাজা ঘোষণা করল আলিপুর পকসো (POCSO)আদালত। আসামীর অপরাধের আচরণ,ভয়ংকর থেকে ভয়ংকরতম।যার নমুনা পেয়ে রীতিমত স্তম্ভিত আদালত। আদালত নাবালিকা খুন এবং ধর্ষণের ঘটনাটিকে বিরল থেকে বিরলতম বলে ঘোষণা করে। গতকাল আসামীর যে রকম ফাঁসির সাজা ঘোষণা হয়েছে। অন্যদিকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিয়েছে ওই মৃত নাবালিকার মাকে।
২০২৩ সালের ২৬শে মার্চ সকাল বেলা বছর সাতেকের ছোট্ট মেয়েটি চায়ের জন্য দুধ আনতে বেরিয়েছিল। সঙ্গে হাতে একটি ময়লার প্যাকেট ছিল। যেটি ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়ার কথাছিল। মেয়েটি ঘর থেকে বেরিয়ে কিন্তু আর ফেরেনি। সঙ্গে সঙ্গে এলাকার বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ খবর করে তাকে আর পাওয়া যায়নি।
তিলজলা থানার বন্ডেল গেট এলাকার ওই আবাসনে একটি সিসিটিভিতে দেখা যায় ,মেয়েটি ময়লা প্যাকেট ফেলে আবার বিল্ডিংয়ে ঢুকে গিয়ে ছিল। তারপর থেকেই সে নিখোঁজ ছিল। পরিবারের লোকজন সঙ্গে সঙ্গে তিলজলা থানায় খবর দেয়। তিলজলা থানার পুলিশ গিয়ে চারদিকে খুঁজে না পেয়ে ফিরে যায়। প্রতিবেশী থেকে আরম্ভ করে পরিবারের লোকজনের সন্দেহ জাগে ওই বিল্ডিংয়ে একটি ঘরের দিকে। অবশেষে সন্ধ্যা বেলা পুলিশকে ডেকে, সেই ঘরে ঢুকে বস্তার বন্দি অবস্থায় নাবালিকার রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার করেছিল।
ওই ঘরটি ছিল বছর ৩৭ এর অলক কুমার স এর।সে এলাকায় গ্যাস সরবরাহের কাজ করত। তাকে পুলিশ গ্রেফতার করার পর,জিজ্ঞাসাবাদে অলোক তার অপরাধের কথা স্বীকার করেছিল।সাত বছরের মেয়েটি অলোককে কাকু বলেই ডাকত।সেই সুযোগ নিয়েছিল ধর্ষণকারী।প্রথমে জোর করে ধর্ষণ করেছিল।তারপর মেয়েটি অসুস্থ হয়ে পড়ায়,তাকে প্রথমে মাথায় হাতুড়ির ঘা মেরে খুন করেছিল।তারপর বস্তার মধ্যে ঢুকিয়ে রেখেছিল।রাতে সবাই ঘুমিয়ে পড়লে,দেহ অন্য কোথাও পাচার করে দেবে বলে,অপেক্ষায় ছিল।কিন্তু সেটা আর সম্ভব হয়নি।তার আগেই সন্ধ্যার পর অলোকের ঘর থেকেই দেহ উদ্ধার হয়ে যায়।
তারপর থেকে এলাকায় উত্তেজনা ছড়াতে শুরু করে। পর দিন সকালবেলা থেকে সেই উত্তেজনা আস্তে আস্তে রাজনৈতিক ইন্ধন পেতে শুরু করে। দুপুর গড়ালে রীতিমত ভয়ংকর অগ্নি স্ফুলিঙ্গের মত পরিস্থিতি তৈরি হয়। রাস্তায় বাইক, গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া থেকে শুরু করে ,রেললাইন অবরোধ শুরু হয়। বণ্ডেল গেট এলাকা রণক্ষেত্র চেহারা নেয়। অভিযোগ এবং বিষোদগার চলতে থাকে পুলিশের বিরুদ্ধে।
পরের দিনই দিল্লী থেকে শিশু কমিশনের এক কর্তা চলে আসেন তিলজলা থানায়। তিনি পুলিশের তদন্তের বিষয়ে নানা অভিযোগ তোলেন। এমনকি তৎকালীন ওসি ওই ব্যক্তিকে মারধর করেছিলেন বলে অভিযোগ দায়ের করেন। খাড়ার ঘা গিয়ে পড়ে ওসি বিশ্বক মুখার্জির উপর। ঘটনা সামাল দিতে গিয়ে লালবাজারের কর্তারা বিশ্বক মুখার্জিকে থানা থেকে অপসারিত করে।

কোলকাতা পুলিশের হোমিসাইড শাখা তদন্ত ভার গ্রহণ করে।তদন্তে নেমে ৪৫ জনের সাক্ষী, ও তথ্য জোগাড় করে,মাত্র ১৭ মাসের মাথায় ফাঁসির কাঠ পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছে ,আসামীকে।সেই সাত বছরের মেয়েটি খুব তাড়াতাড়ি বিচার পেল।

পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ ,বিষোদগার – তারই বোধহয় বদলা নিল কোলকাতা পুলিশ। গতকাল ওই মামলাতে ফাঁসির সাজা ঘোষণা হয় আলিপুর আদালতে। আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে থাকা প্রচুর মানুষের বক্তব্য ছিল, আরজিকরের ঘটনা সিবিআই-এর হাতে রয়েছে।এই রাজ্যে এর আগে যে যে মামলায় সিবিআই তদন্ত হয়েছে। তাতে শাস্তি ক’জনের হয়েছে?
আজ হলদিয়া আদালতেও একটি খুন এবং ধর্ষণের মামলার রায় শুনানির পর্ব চলছে।


Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *