শঙ্কু সাঁতরা : “আমাকে ভয় দেখানো হচ্ছে। আমি কিন্তু রেপ আর মার্ডার করিনি। অন্যদের বাঁচানোর জন্য আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। ডিপার্টমেন্ট আমাকে চুপ থাকতে বলেছিল। ” শিয়ালদা আদালত থেকে জেলের কালো জাল গাড়িটি বেরোনোর সময় চিৎকার করে বলে যাচ্ছিল সঞ্জয় রায়। এ সেই সঞ্জয় রায়। যিনি সিভিক ভলেন্টিয়ার। আরজি কর মেডিকেল কলেজে ডাক্তার খুন এবং ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্ত। আদালত থেকে আজকে বের করে নিয়ে যাওয়ার সময় তার বিস্ফোরক মন্তব্য সংবাদ মাধ্যমের সামনে বেশ গুরুত্ব পেয়েছে।
দেশের আইন অনুযায়ী গ্রেপ্তার থাকাকালীন কোন আসামী কাউকে কিছু বললে, সেটা আদালতে ধর্তব্যের মধ্যে পড়ে না। তবে ইতিমধ্যেই সঞ্জয়ের বিস্ফোরক বক্তব্য নিয়ে রীতিমতো রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় শুরু হয়েছে। আজ সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জ ফ্রেমের দিন ছিল। রুদ্ধ দ্বার কক্ষে, সেই চার্জ ফ্রেম হয়। সঞ্জয় তার বক্তব্যের মধ্যে ডিপার্টমেন্ট কথাটি উল্লেখ করে। সবাইয়ের ধারণা, ডিপার্টমেন্ট বলতে পুলিশ ডিপার্টমেন্টের কথা উল্লেখ করেছে।
এছাড়াও সে বলছিল সরকার আমাকে ফাঁসিয়ে দিল। এতক্ষণে যুক্তিবাদীদের যুক্তি তক্কো শুরু হয়ে গেছে। তাহলে কি সঞ্জয়কে সরকার কোন প্রলোভন দিয়েছিল? সঞ্জয়কে এতদিন চুপ থাকতে বলেছিল। আজ যখন চার্জ ফ্রেম হল, সঞ্জয় পরিষ্কার বুঝেছে তার এই অপরাধের পরিণতি কি হতে পারে? তবে এ পর্যন্ত চার্জশিটে সঞ্জয়কেই সম্পূর্ণ অপরাধী বলে সিবিআই উল্লেখ করেছে।
এবার শুরু হয়েছে গেল গেল রব। কিছু দিন আগে যখন আদালতে চার্জশিট জমা দেয় সিবিআই। আদালতের মধ্যে দাঁড়িয়ে সঞ্জয় চিৎকার করে জজ সাহেবের উদ্দেশ্যে বলেছিল, তাকে ফাঁসানো হচ্ছে। সে কিছু বলতে চায়। আদালতে কিছু বলতে গেলে তার জন্য নির্দিষ্ট পদ্ধতি রয়েছে ।জজ সাহেব সে সময় থাকে পরামর্শ দেন। এবং তাকে তার উকিলের সঙ্গে কথা বলতে বলে।
সঞ্জয় রায় যখন দেখেছে যে,দেওয়ালে তার পিঠ ঠেকে গেছে। তার অপরাধের পরিণতি কি হবে? সেটা নিয়ে যথেষ্ট চিন্তায় পড়েছে সঞ্জয়। তবে ডিপার্টমেন্ট, অন্যকে বাঁচানোর জন্য ওকে ফাঁসিয়েছে। সরকার তাকে ফাঁসাচ্ছে। এই বক্তব্য গুলো রীতিমতো সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করবার মতই বিষয় হাতে তুলে দিল সঞ্জয়। ইতিমধ্যেই সুকান্ত মজুমদার এই বিষয় নিয়ে টুইট করা শুরু করেছেন বিরোধীদের হাতে আরজি করের কাণ্ড নিয়ে তেমন কোন অস্ত্র ছিল না। এবার সেই অস্ত্র সঞ্জয় তুলে দিল বলে ধারণা করছে বিশেষজ্ঞ মহল।
সঞ্জয়ের এই ধরনের বিস্ফোরক বক্তব্যের পর, সিবিআই তাকে জেলে গিয়ে আবার জিজ্ঞাসাবাদ করবে কিনা? সেটা নিয়ে একটা সন্দেহ দানা বেঁধেছে। কারণ, সঞ্জয়ের আজকের বিস্ফোরক বক্তব্য, সিবিআই তদন্তে নতুন মোড় সৃষ্টি করতে পারে বলে ধারণা করছে আইনজীবী মহল।