আন্দোলনের শহর কলকাতা। জেলার কোন ঘটনা !সেটাও পর্যন্ত কলকাতায় এসে প্রতিফলিত হয়। তবে ২৬ হাজার শিক্ষক ও অশিক্ষকের চাকরি চলে যাওয়া। রীতিমতো রাজ্য রাজনীতিতে ঝড় তুলেছে। সুপ্রিম কোর্ট শিক্ষকদের চাকরি বাতিল ঘোষণার পরেই, রীতিমত ভেঙে পড়েছে ২৬ হাজার শিক্ষক- শিক্ষিকা থেকে আরম্ভ করে শিক্ষা কর্মীরাও পর্যন্ত। হবে কি?
২০১৬ সালের স্কুল শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যে চূড়ান্ত দুর্নীতি ছিল, সে দুর্নীতির লেজ কিংবা মাথা খুঁজে পাওয়া বড় মুশকিল। সিবিআই তদন্ত করে যতটুকু জমা দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। তাতেও সুপ্রিম কোর্ট পুরোপুরি সন্তুষ্ট না হয়ে ২০১৬ সালের পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়াটাই বাতিল করে দিয়েছে। যেটা বারবার ধরে উল্লেখ করা হয়েছে যে,ওটি একটি সংগঠিত অপরাধ। চাকরি চলে যাওয়ার পর থেকেই শিক্ষকেরা আন্দোলনে নামা শুরু করেছে। ৭ই এপ্রিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেতাজি ইন্ডোরে, সবাইকে আশ্বস্ত হতে বলেছিলেন। যদিও শিক্ষকরা ভবিষ্যতে স্কুলে আর ফিরতে পারবেন কিনা? সেটা নিয়ে সন্দেহাতীত রয়েছেন। তাই তারা বিভিন্ন ভাবে আন্দোলনে নামছে।
২০২৪ সালে হাইকোর্টের নির্দেশে এই ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল ঘোষণার পর সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। এছাড়াও এই সমস্ত শিক্ষকদের সংগঠন। হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে যাওয়ার পরও কোন সমাধান হয়নি। বরং হাইকোর্টের রায়কেই মান্যতা দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
৯ই এপ্রিল শিক্ষকরা বালিগঞ্জ ডিস্ট্রিক্ট ইন্সপেক্টর অফ স্কুলের অফিসে, ধরনা দেওয়ার জন্য যায়। কারণ শিক্ষকদের কাছে এখনো পর্যন্ত রাজ্য সরকারের তরফ থেকে কোন চিঠি কিংবা লিখিত কোন নির্দেশ গিয়ে পৌঁছায়নি।তারা কি করবে?সেটা তাদের জানা অত্যধিক জরুরী।শিক্ষকরা দল বেধে গিয়ে যখন পৌঁছায়, তারপরই কসবা থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী এবং ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিশের বাহিনী অতর্কিত লাঠিচার্জ শুরু করে শিক্ষকদের ওপর। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় এক শিক্ষককে এক সাদা পোশাকের পুলিশ কর্মী সজোরে লাথি মারলেন। এছাড়া প্রচুর শিক্ষককে পুলিশের লাঠির ঘায়ে আহত হতে দেখা যায়
তবে শিক্ষক এবং পুলিশ দু-তরফের ধস্তাধস্তি দৌড়া দৌড়িতে আহত হয়েছেন কসবা থানার সার্জেন্ট তন্ময়। সূত্রের খবর, তন্ময় বাবুর ডান পায়ের হাড় চিড় ধরেছে। তাকে ‘ডিসান’ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ডান পা’টি প্লাস্টারও করতে হয়েছে। দু-পক্ষেরই আহত হওয়ার খবর রয়েছে।
কিন্তু শিক্ষককে লাথি মারাটা নিয়ে রীতিমত সাধারণ মানুষের মধ্যে চাপা ক্ষোভ এবং কড়া সমালোচনার ঝড় উঠছে। বিভিন্ন সময়ে হঠাৎ করে পুলিশকে অতি সক্রিয় হতে দেখা যাচ্ছে। সাধারণ মানুষের মনে ক্ষোভের ঝড় খুবই ধীরগতিতে উঠছে। তবে শিক্ষকদের এই ভাবে মারধর করা এবং লাঠিচার্জ করা নিয়ে রীতিমতো পুলিশ মহলের নিচু স্তরে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে,বলে খবর।
