সোহান রক্ষিত, বাঁকুড়া :প্রায় কুড়ি বছর আগে ঘটা হেতাল পারেক হত্যাকাণ্ডে আদালতের নির্দেশে হয়েছিল ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের ফাঁসি। সেই ঘটনার দুই দশক পেরিয়ে গেলেও এবার এই কেস রি ওপেন এর দাবিতে গণস্বাক্ষর অভিযানে নামলো ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় মমলা পুনর্ বিচার মঞ্চ।
রবিবার ছাতনার নতুন বাসুলি মন্দিরে গণস্বাক্ষর অভিযানের আগে সাংবাদিক সম্মেলন করেন ওই মঞ্চের কনভেনার ডা: চন্দ্রচূড় গোস্বামী বলেন আমরা চাই ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় মামলা পুনর বিচার, ইতিমধ্যেই আমরা দেশের রাষ্ট্রপতি থেকে শুরু করে এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও আইন মন্ত্রীকে আমরা লিখিত ভাবে জানিয়েছি। সমাজের সর্বস্তর থেকে এই মামলা পুন: বিচারের আবেদন আসছে, তাই ছাতনার সামন্ত ভূমির মা বাসুলী কে সাক্ষী রেখে সহি সংগ্রহ অভিযান শুরু করলাম। আমরা ত্রুটিহীন বিচার ব্যবস্থা ও অপরাধ বিহীন সমাজ ব্যবস্থা স্থাপন করতে চাই। মানুষের বিশ্বাস ও তথ্য প্রমাণ নিয়ে আমরা একশো শতাংশ নিশ্চিত ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় প্রকৃত বিচার পাননি। হতে পারে সেই সময়ের সরকার বা নেতা মন্ত্রীরা টাকার কাছে বিক্রি হয়ে গেছিলেন। প্রকৃত অপরাধীকে আড়াল করার জন্য ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় কে ফাঁসানো হয়েছিল।
চন্দ্রচূড় গোস্বামী
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য সালটা ছিল ১৯৯০, সেই বছর মার্চ মাসে কলকাতার ভবানীপুরের এক আবাসনে পাঁচই মার্চ এক এক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়। সেই সময়কার হাড় হীম করা এই ঘটনায় গ্রেপ্তার হন ওই আবাসনের নিরাপত্তারক্ষী ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়, তার বাড়ি বাঁকুড়া জেলার ছাতনা ব্লকের কুলুডিহি গ্রামে। এর পর দীর্ঘদিন আইনে লড়াইয়ের পর আদালত আদালতের চোখে দোষী সাব্যস্ত হন ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়। সাজা হিসেবে ঘোষণা করা হয় মৃত্যুদণ্ড। আদালতের এই নির্দেশিকা অনুযায়ী ২০০৪ সালের ১৪ই আগস্ট ফাঁসি দেওয়া হয় ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় কে।
রাজ্যে সম্প্রতি আরজিকরে চিকিৎসক হত্যা দেশজুড়ে উঠেছে নিন্দা ঝড়, গ্রেফতার করা হয়েছে সঞ্জয় রায় নামে এক সিভিক ভলেন্টিয়ারকে, এই ঘটনার তদন্ত নেমে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে বিভিন্ন সময় উঠে আসছে বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর তথ্য। এই ঘটনায় সঞ্জয় রায়কে বিভিন্ন সময় আদালতে তোলার আগে সে নিজে প্রিজন ভ্যান এর জানালা দিয়ে সংবাদ মাধ্যমের কাছে অভিযোগ করেছে ” আরজিকর হত্যাকান্ডে তাকে ফাঁসানো হয়েছে ” এই মত অবস্থায় রাজ্য বাসির চোখে সঞ্জয় রায় যেন ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিচ্ছবি।
অন্যদিকে আজ থেকে প্রায় ২০ বছর আগে ঘটা হেতাল পারেক হত্যাকাণ্ডে ধনঞ্জয়ের ফাঁসি। এই ঘটনায় ধনঞ্জয়ের পরিবার, প্রতিবেশি সহ ছাতনাবাসি আজও মনে করে ধনঞ্জয় ছিল নির্দোষ। তাই এই মামলার পুনর বিচারে দাবিতে উঠছে সাধারণ মানুষের রব।