রক্তিম ওঝা: উত্তর কলকাতার গিরিশ পার্ক এলাকায় ব্যবসায়ীকে খুন করে ট্রলি ব্যাগে তাঁর দেহ ভরে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা হয়েছিল। কল্যাণীর এক্সপ্রেসওয়ের উপর ট্রলির ভেতরে দেহ উদ্ধারের ঘটনায় এমনি তোশমঠ পেলো পুলিশ ।
ইতিমধ্যেই ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি থেকে কিছুদূরে একটি বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার এই ঘটনার এক অভিযুক্ত । তদন্তে জানা গিয়েছে খুন হওয়া ওই ব্যক্তির পরিচয় ও । পুলিশ সূত্রে খবর , ৮ লক্ষ টাকার জন্য খুন হতে ভাগারাম দেবাসী নামে ওই ব্যবসায়ীকে।
মঙ্গলবার গভীর রাতে কল্যানী এক্সপ্রেসওয়ের ওপর অ্যাপ ক্যাবের ডিকি থেকে পুলিশ একটি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার করে । ট্রলিব্যাগ এ দেখা যায় সেলোটেপ এ মোড়া একটি বস্তা । সেটা খোলার পর মেলে একটি ব্যক্তির দেহ এবং মুখে সেলোটেপ গলায় ক্ষতচিহ্ন ছিল তার । এই ঘটনায় অ্যাপ ক্যাবের এক ব্যক্তি কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ । তবে দ্বিতীয় অভিযুক্ত পুলিশ কে দেখে পালিয়ে গেলেও কয়েকঘন্টার মধ্যে ঠনঠনিয়া কালীবাড়ির অদূরে মুক্তারাম স্ট্রিট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ । ধৃতের নাম কৃষপাল সিং ।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে , মৃত ভাগারাম রাজস্থানের বাসিন্দা । বড়বাজারে কাপড়ের ব্যবসা করতে তিনি । থাকতেন গিরিশ পার্ক এলাকাতেই । কোনরকমে ব্যবসায়িক সূত্রে কৃষপাল এবং কারণ সিংহ এর সঙ্গে তদন্তে যেমন টা জানা যাচ্ছে অভিযুক্তদের কাছ থেকে ৮লক্ষ নিয়েছিলেন ভাগারাম। কিন্তু ওই টাকা ফেরত দিয়ে টালবাহানা করেছিলেন ভাগারাম। ঐদিন এই বিষয়ের হেস্তনেস্ত করতে গিরিশ পার্ক এলাকায় যান ওই অভিযুক্ত । সেখানেই কফি তে বিষ মিশিয়ে খাইয়ে দেন ওই দুই অভিযুক্ত । ভাগারাম কফি খেয়ে অচৈতন্য হয়ে গেলে তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। তারপর গলার নলি ও কাটা হয়। এরপর রাত ৯ নাগাদ অ্যাপ ক্যাব ভাড়া করে নদিয়ার দিকে পাড়ি দেন অভিযুক্তরা ।
খুনিদের পরিকল্পনা ছিল কোনো একটি নির্জন জায়গায় ট্রলিটি ফেলে পালিয়ে যাওয়া। তবে বুদ্ধিমান ওই ক্যাব চালকের জন্য তাদের ওই পরিকল্পনা সফল হয়নি । মাঝরাস্তায় হঠাৎ গাড়ি থামাতে বলায় কৌতূহলী হয়ে পড়েন রাহুল অধিকারী নামে গাড়িচালক। তাঁর দাবি, কেন গাড়ি থামানো হল, এ নিয়ে প্রশ্ন করায় তাঁকে নানা কথা বলেন করণ ও কৃশপাল। তাঁদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হচ্ছিল। সেই সময় টহলরত পুলিশ ভ্যান থেকে নেমে পুলিশকর্মীরা গাড়িটির কাছে এগোতেই কৃশপাল দৌড়ে পালান। ঘটনাক্রমে ট্রলির মধ্যে দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ট্রলির মধ্যে মেলে নগদ ৬৫ হাজার টাকা এবং রক্তমাখা অস্ত্রও। গ্রেফতার হন করণ। তাঁকে থানায় নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর বিভিন্ন তথ্য পান তদন্তকারীরা। এর পর মোবাইল ফোনের টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে কৃশপালকে মুক্তারামবাবু স্ট্রিটে গিয়ে পাকড়াও করেছে পুলিশ।