শঙ্কু সাঁতরা: প্রতিটি সংসারে কার্তিকের মত ছেলে জন্মগ্রহণ করুক আর লক্ষ্মীর মত মেয়ে। তবে আমাদের ভারতীয় সংস্কৃতিতে এখনো পর্যন্ত কার্তিকের চাহিদাটা অনেকটাই বেশি। সাধারণ সমাজে কার্তিকের পুজো করে সবাই। কারণ ,একটি কার্তিকের মত পুত্র সন্তান লাভ করবার জন্য। প্রতিটা বাড়িতে কার্তিক পূজা হবে কিনা? তা কিন্তু ঠিক থাকে না। কারণ, নিয়ম করে প্রতিটা বাড়িতে সব সময় কার্তিক পুজো পায় না।
কার্তিক বিশেষ ভাবে পূজো পায় যৌনপল্লী গুলোতে। প্রতিবারের মতো এবারও সোনাগাছি যৌনপল্লীতে কার্তিক পুজোর আয়োজন করা হয়েছে। কার্তিক পুজো উদ্বোধন করবেন, রাজ্যের মন্ত্রী ডাক্তার শশী পাঁজা। তবে আর পাঁচটা পুজোর থেকে যৌনপল্লীতে কার্তিক পুজো বেশ ধুমধাম সহকারে হয় এবং রীতিনীতি মেনেই হয়। অনেকের প্রশ্ন থাকে, কার্তিক পুজো যৌনপল্লীতে হয় কেন?
যৌনপল্লী গুলোতে মূলত যে সমস্ত যৌনকর্মীরা থাকেন। একটা সময় তাদের জীবনের ধারা বদলে গেলেও , সংসার সীমার বাইরে চলে গেলেও, তারা স্বপ্ন দেখতে ভোলে না। যৌনকর্মীরা চায় কার্তিকের মত একটি প্রেমিক কিংবা কার্তিকের মত একটা স্বামী ।আবার কার্তিকের মত একটি সন্তান। অর্থাৎ স্বপ্নের সওদাগর যেন সুন্দর কাউকে পাঠায় তার জীবনে। মনে রাখতে হবে কার্তিক কিন্তু অবিবাহিত। অর্থাৎ মেয়েরা ভাবে তার জীবনে ঝঞ্ঝাটহীন কোন পুরুষ আসুক।
ঝঞ্ঝাটহীন পুরুষ আসার একটাই কারণ, তারা জীবনের এমন একটা সময় এমন একটা ধাক্কা খেয়েছে ।যার ফলে ছিটকে গিয়েছে উল্কার মত। কোথায় ঠাই হবে তারা বোঝার আগেই ঠাঁই হয়েছিল যৌনপল্লীতে। যতই অন্ধকার রাস্তা পেরিয়ে আসুক, অন্ধকার গলিতে থাকুক। আর পাঁচটা মেয়ের মতই ,ওদের স্বপ্ন একই থাকে। তাই ধুমধাম করে কার্তিককে পুজো করা ।কার্তিককে স্মরণ করা। তারই ধুম লেগেছে, সোনাগাছি যৌনপল্লীতে। রাত থেকে নিষ্ঠা করে, পরের দিন পুজোর জন্য অনেকেই কেউ উপোস করছে। কেউবা নিষ্ঠা সহকারে অপেক্ষায় রয়েছে।
সবাই জানে, স্বপ্নের সওদাগর হয়তো তার ভেলাতে করে ,কোন এক সময় কার্তিককে নিয়ে আসবে তাদের পাশে। তাইতো প্রতিবছরই নিয়ম করে কার্তিক পুজো করে ওরা । ১৬ই নভেম্বর কার্তিক পুজো ঠিক সময় সোনাগাছির শীতলা মন্দিরের সামনে শুরু হবে। যৌন কর্মী ও তাদের সন্তানদের সংগঠন `আমরা পদাতিক` এর পক্ষ থেকে সবাইকে নিমন্ত্রণ জানিয়েছে পুজো দেখতে।এবার পুজো হচ্ছে প্রকাশ্যে। পূজোর উদ্বোধনে উপস্থিত থাকছেন ডাক্তার মন্ত্রী শশী পাঁজা।