নাবালিকাকে ধর্ষণের দায়ে এক যুবককে ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল বর্ধমানের পকসো আদালত, পাশাপাশি ১ লক্ষ টাকা জরিমানার নির্দেশও দিল আদালত।
জরিমানার টাকা অনাদায়ে আরও ৬ মাস সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে সাজাপ্রাপ্তকে। জরিমানার টাকা জমা দিলে তার ৯০ শতাংশ পাবে নির্যাতিতা। এছাড়াও নির্যাতিতাকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে সাড়ে ৭ লক্ষ টাকা দেওয়ার জন্য বর্ধমান জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষকে সুপারিশ করেছেন বিচারক।
বুধবার পকসো আদালতের বিচারক বর্ষা বনশল আগরওয়াল এই রায় ঘোষণা করেন।
সাজাপ্রাপ্তের নাম বাপন বাগ ওরফে কাদাই। তার বাড়ি ভাতার থানার মাদপুরে।
এই মামলার সরকারি আইনজীবী শ্যামল কুমার গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, এই রায় বার্তাবহ। সমাজের কাছে দৃষ্টান্ত তুলে ধরবে। কারাবাসের পাশাপাশি বিচারক আর্থিক জরিমানাও করেছেন।
তবে যতদিন সাজাপ্রাপ্ত জেলে ছিল তা সাজার মেয়াদ থেকে বাদ যাবে। জরিমানার টাকার ৯০ শতাংশ ক্ষতিপূরণ হিসেবে পাবে নির্যাতিতা।
বর্ধমান আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৩ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি মাসে ঘটনাটি ঘটে। সেদিন ছিল সরস্বতী পুজো। ভাতার থানা এলাকার সাড়ে ৯ বছরের ওই নাবালিকা পাড়ায় ঠাকুর দেখে বাড়ি ফিরছিল। সেই সময় বাপন তাকে জোর করে অন্ধকার জায়গায় নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। নাবালিকা গুরুতর জখম হয়। বাড়ি ফিরে ঘটনার কথা পরিবারের লোকজনকে বলে। পরিবারের লোকজন তড়িঘড়ি তাকে ভাতার হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখানে ১৩ দিন চিকিৎসার পর নাবালিকা সুস্থ হয়।
ঘটনার দিনই নাবালিকার পরিবারের তরফে ভাতার থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়।
সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ভাতার থানার পুলিশ – ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬(২)(এফ) এবং ৫(১) এবং পকসো অ্যাক্টের ৬ ধারায় মামলা রুজু করে ।
এরপর ১৮ ই ফেব্রুয়ারি রাতে বাপনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
তবে ২০১৫ সালের ১১ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্ত হয় সে। কেসের তদন্তকারী অফিসার আদালতে চার্জশিট পেশ করেন। ২০১৫ সালের ১৭ মার্চ মামলার চার্জ গঠন হয়। মামলায় ১২ জন সাক্ষ্য দেন।
এরপর মঙ্গলবার বাপনকে পকসো অ্যাক্টের ৬ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। বুধবার রায় ঘোষণা করেন বিচারক বর্ষা বনশল আগরওয়াল।