ভোটের বছরে রাজনীতির মঞ্চে এক অন্য রঙের কৌশল বিজেপির। রাজ্যের নবনিযুক্ত বিজেপি সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য এবার খোলা মনেই ডাক দিলেন অবিজেপি সমর্থকদের। তিনি চাইছেন, শুধু গেরুয়া ভাবাদর্শে বিশ্বাসী নয়, এমন ভোটাররাও বিজেপির দিকে আসুন। সেই বার্তা আরও জোরালো হল শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিবস পালনের দিনে। মুরলীধর সেন লেনের অনুষ্ঠানে উঠে এল জ্যোতি বসুর নামও।
রাজ্য বিজেপির সভাপতি হিসেবে শমীকের এ এক নতুন রাজনৈতিক বার্তা। বললেন, “যাঁরা জ্যোতি বসুকে লিডার অব লিডার্স বলেন, তাঁরা যেন ২০ জুনের ঐতিহাসিক ভোটকে স্মরণ করেন। বাংলা বিভাজনের প্রশ্নে শ্যামাপ্রসাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন জ্যোতি বসু। পশ্চিমবঙ্গ যে আজ ভারতের অংশ, সেই সিদ্ধান্তের পিছনে তাঁরও সমর্থন ছিল। তাই জ্যোতিবাবুকে শ্রদ্ধা জানাতে হলে, এই বাস্তবতাকেও স্বীকার করতে হবে।”
বাম শিবিরে একে তীব্র রাজনৈতিক বার্তা বলেই ব্যাখ্যা করছেন কেউ কেউ। কারণ, বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন। শমীক ভট্টাচার্য ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করেছেন, বিজেপির বিরুদ্ধে যারা নো ভোট টু বিজেপি স্লোগান দিয়েছিল, তাদের প্রতি আহ্বান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষে পথে না নেমে সরাসরি বিজেপির সঙ্গে লড়াই করুন। তাঁর কথায়, “ভোট কেটে তৃণমূলকে ফের ক্ষমতায় আনবেন না। তাহলে পশ্চিমবঙ্গ আর পশ্চিমবঙ্গ থাকবে না।”
বামেদের তরফে এখনও এই বার্তার কড়া প্রতিক্রিয়া না মিললেও, বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু জানিয়েছেন, “নতুন দায়িত্ব পেয়েছেন সমীরবাবু। এখনই চূড়ান্ত মন্তব্য করব না। উনি ভবিষ্যতে কী বলেন, সেটা দেখতেই হবে। তবে আমরা মানুষে মানুষে বিভাজন পছন্দ করি না।”
এদিকে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে—এ কি তাহলে বাম ভোটের ঘর ভাঙার চেষ্টা বিজেপির তরফে? নাকি নিছকই ঐতিহাসিক প্রসঙ্গ তুলে এক নতুন ছক কষার আভাস? স্পষ্ট না হলেও জল্পনা কিন্তু বাড়ছেই।