বাংলাদেশের জেলে আটক ভারতীয় ৭৯ জন মৎস্যজীবী ।এই পরিস্থিতিতে বাড়ি একমাত্র রোজগেরে আটকে থাকায় প্রায় অনাহারে দিন কাটাচ্ছে অসহায় মৎস্যজীবী পরিবার গুলি।
নিজস্ব সংবাদ দাতা : প্রায় দেড় মাস আগে সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে বাংলাদেশের উপকূল রক্ষী বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপের ৭৯ জন মৎস্যজীবী। তারা এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশের জেলেই রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সমস্যায় পড়েছেন ৭৯টি মৎস্যজীবি পরিবার।বেশ কয়েকটি পরিবার প্রায় অনাহারেই দিন কাটাচ্ছে। ঘরের ছেলেরা কবে বাংলাদেশ থেকে বাড়িতে ফিরবে!এখন সেই পথ চেয়ে বসে রয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।
জানা গেছে, গত প্রায় দেড় মাস আগে পাঁচটি ট্রলার সমুদ্রে মাছ ধরতে গেছিল। অভিযোগ, ওই ট্রলার গুলি মাছ ধরার সময় বাংলা দেশের জল সীমার মধ্যে ঢুকে পড়ে। এরপরই বাংলাদেশের উপকূল রক্ষী বাহিনী ট্রলার গুলি সহ ৭৯ জন মৎস্যজীবীকে গ্রেপ্তার করে। বর্তমান ওই মৎস্যজীবীরা বাংলাদেশের পটুয়াখালি ও বাঘেরহাট জেলে বন্দি রয়েছে।
একই ভাবে ট্রলারে মাছ ধরতে গেছিলেন কাকদ্বীপের ত্রিলোক চন্দ্র পুরের বাসিন্দা সাগর যাদব। কয়েক বছর আগে তাঁর বাবা পরিবার ছেড়ে চলে গেছেন। বর্তমান মা ও ছেলে একসঙ্গে থাকেন। অভাবের সংসারে দূর্গা পূজার সময় তারা নতুন জামা কাপড় কিনতে পারেনি। তাই কালী পুজোর সময় নিজের নতুন জামা প্যান্ট ও মা’কে নতুন কাপড় কিনে দেওয়ার জন্য সমুদ্রে মাছ ধরতে গেছিল সাগর। কিন্তু এখনও সে বাড়ি ফেরেনি। এবিষয়ে সাগরের মা অনিমা দেবী বলেন, “সাগর বাংলাদেশের একটি জেলে রয়েছে বলে শুনেছি। তবে কোথায় আছে! কবে ফিরবে! এ বিষয়ে কিছু জানিনা।ছেলে এখনও পর্যন্ত বাড়িতে না ফেরায় খুব সমস্যার মধ্যে রয়েছি। পরিবারের মধ্যে সেই একমাত্র রোজগেরে ছিল। ছেলে বাড়িতে না ফেরায় অর্ধেক দিনই খেতে পাই না। অনেক সময় প্রতিবেশীরা বাড়িতে ভাত ও তরকারি দিয়ে যান। কোন রকমের বেঁচে রয়েছি।”
কার্তিক দাস, আকাশ বিশ্বাস সহ বাকি মৎস্যজীবী পরিবার গুলিরও একই অবস্থা। এখন বাংলাদেশের জেলে থাকা সব মৎস্যজীবী পরিবারগুলির একটাই দাবি, সরকার গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টিকে দেখুক এবং বাংলাদেশ থেকে তাঁদের ফিরিয়ে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করুক।
সুন্দরবন সামুদ্রিক মৎস্যজীবী শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক সতীনাথ পাত্র বলেন, “এই পরিস্থিতিতে সত্যিই ওই মৎস্যজীবী পরিবার গুলি অসহায় হয়ে পড়েছেন। তাঁরা খুব কষ্টের মধ্যে রয়েছেন। মৎস্যজীবী ইউনিয়নের পক্ষ থেকে তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে তাঁদের ফিরিয়ে আনার জন্য প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।”
কিন্তু এই মুহূর্তে ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সমঝোতা না থাকার ফলে ,তাদের কি পরিস্থিতি হচ্ছে কিংবা তারা আদৌ কতদিনে দেশে ফিরতে পারবে !সেটা নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্ন চিহ্ন দেখা দিয়েছে পরিবারগুলোর মধ্যে।