সত্যজিতের পৈতৃক ভিটে ভাঙার সিদ্ধান্তে বাংলাদেশ এবং দিল্লিকে চিঠি মমতার— চিঠির পরেই তৎপর কেন্দ্র

Spread the love

বাংলাদেশে সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক ভিটে ভাঙা হতে চলেছে—এই খবরে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে দুই বাংলার সংস্কৃতি মহলে। ঠিক এই সময়েই হস্তক্ষেপ করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরাসরি চিঠি পাঠালেন বাংলাদেশের সরকারকে, পাশাপাশি বিশেষ অনুরোধ জানালেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে। এরপরেই তৎপর কেন্দ্র। সত্যজিৎ রায়ের পৈত্রিক বাড়ি সংস্কার নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা করবে নয়াদিল্লি।

সত্যজিৎ রায়, যিনি শুধু ভারতীয় সিনেমার নয়, বিশ্ব চলচ্চিত্রের অন্যতম উজ্জ্বল মুখ—তাঁর পৈতৃক ভিটে রয়েছে বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জে। সেই বাড়িটি ভাঙার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন, উন্নয়ন প্রকল্পের অংশ হিসেবে। আর এই সিদ্ধান্তেই উঠেছে প্রবল আপত্তি। ইতিহাস এবং সংস্কৃতির প্রশ্নে এমন পদক্ষেপ একপ্রকার “চরম অসম্মান”—এমনটাই দাবি চলচ্চিত্র-সংস্কৃতি মহলের।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “সত্যজিৎ রায় আমাদের গর্ব। তিনি ভারতীয় চলচ্চিত্রকে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দিয়েছেন। তাঁর পৈতৃক ভিটে শুধু ইট-পাথরের বাড়ি নয়, সেটা আমাদের ঐতিহ্য, আমাদের আবেগ। তা মুছে ফেলাটা সংস্কৃতির উপর আঘাত।” সেই কারণেই তিনি নিজে উদ্যোগ নিয়ে চিঠি দিয়েছেন ঢাকায় বাংলাদেশ সরকারের কাছে।

তাঁর এই চিঠিতে রয়েছে ঐতিহ্য রক্ষার আর্জি। মমতা চেয়েছেন, সত্যজিতের স্মৃতিধন্য এই বাড়িটিকে ধ্বংস না করে সেখানে একটি স্মারক জাদুঘর, সংস্কৃতি কেন্দ্র বা চলচ্চিত্র গবেষণাগার গড়ে তোলা হোক, যেখানে দুই বাংলার মানুষ একত্রে চলচ্চিত্র ও ঐতিহ্যের সংযোগ খুঁজে পাবে।এখানেই থেমে থাকেননি মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বিশেষভাবে অনুরোধ জানিয়েছেন প্রখ্যাত মানবাধিকার ও সমাজসেবী ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে, যিনি আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করেন।

পাশাপাশি, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার, বিশেষত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি দিয়ে বিষয়টিতে কূটনৈতিক স্তরে হস্তক্ষেপ করার আবেদন জানিয়েছেন।বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই সরগরম নেটদুনিয়া। কলকাতা সহ দুই বাংলার অসংখ্য সিনেমা প্রেমী, সাহিত্যিক, ইতিহাসবিদ ও ছাত্রছাত্রী মিছিল, পোস্টার ও অনলাইন প্রচারে নেমেছেন। দাবি একটাই—ভাঙা চলবে না সত্যজিতের স্মৃতি!

এখন দেখার, মুখ্যমন্ত্রীর এই সাংস্কৃতিক কূটনৈতিক পদক্ষেপে বাংলাদেশের প্রশাসন মত বদলায় কিনা। তবে আপাতত সত্যজিতের নামকে ঘিরে এক অভূতপূর্ব আবেগে এক হয়েছে দুই বাংলা।


Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *