রণথম্ভোর ন্যাশনাল পার্ক যেন নিঃশব্দে কাঁদছে। আর কখনও দেখা যাবে না সেই গর্জন, আর ধরা দেবে না ক্যামেরায় সেই করুণ yet রাজকীয় চাহনি। মারা গেলেন রণথম্ভোরের অন্যতম জনপ্রিয় বাঘিনী অ্যারোহেড (T-84)। বয়স হয়েছিল মাত্র ১১ বছর। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন তিনি। হাড়ের ক্যানসার এবং মস্তিষ্কে টিউমার তাঁর দেহকে নিঃশেষ করে দিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কাছে হার মানলেন এই জঙ্গলের রানী।

অ্যারোহেড ছিলেন শুধুই এক বাঘিনী নন, রণথম্ভোরের আত্মা। তাঁর রূপ, বর্ণময় উপস্থিতি, আর সেই অদম্য সাহস তাঁকে বনের অন্য বাঘিনীদের থেকে আলাদা করে তুলেছিল। মাছলি—যিনি ছিলেন ‘রণথম্ভোরের রানী’ বলে পরিচিত—তাঁরই রক্ত বইছিল অ্যারোহেডের শরীরে। মাছলির নাতনি হিসেবে অ্যারোহেডের মধ্যে ছিল বংশগত গর্ব, এবং তার সঙ্গে ছিল নিজের গড়া ইতিহাস।বছরের পর বছর পর্যটকরা এসেছেন শুধু তাকে এক ঝলক দেখতে। ক্যামেরাবন্দি হয়েছেন হাজার বার। তাঁর চলন, শিকার, সন্তানের জন্ম—সবকিছুই যেন ছিল রণথম্ভোরের দৈনন্দিন জীবনের এক পর্ব। অথচ আজ সেই অধ্যায় শেষ হয়ে গেল। বনকর্মীরা বলছেন, অ্যারোহেডের মৃত্যু এক শূন্যতা তৈরি করল যা সহজে পূরণ হওয়ার নয়।রণথম্ভোরের বনে এমন বহু বাঘ এসেছে, আবার হারিয়ে গিয়েছে। কিন্তু অ্যারোহেড ছিল একেবারে আলাদা। সে ছিল ঐতিহ্যের ধারক, সেই জঙ্গলের আত্মমর্যাদার প্রতীক। তাঁর চলে যাওয়াটা কেবল একটা জীবনের অবসান নয়—এ যেন এক যুগের শেষ।