নবম শ্রেণি পাশেই শিক্ষার দফতরের বড়কর্তা! রিঙ্কুর মোটা মাইনের চাকরি ঘিরে তুফান

Spread the love

স্কুলের বই ছেড়ে ব্যাট ধরেছিলেন একদিন, স্বপ্ন ছিল বড় ক্রিকেটার হওয়ার। স্বপ্ন সত্যি হয়েছে, দেশও জিতেছে তাঁর ব্যাটে। কিন্তু সেই সাফল্যের পুরস্কার কী একেবারে শিক্ষা দফতরের অফিসার পদ? রিঙ্কু সিংহ এখন সরকারি অফিসার! তাও আবার ‘বেসিক এডুকেশন অফিসার’—যার কাজ জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিকে তদারকি করা।

হ্যাঁ, ঠিকই পড়ছেন। মাত্র নবম শ্রেণি পাশ করা রিঙ্কু সিংহ বসতে চলেছেন এমন এক পদে, যার জন্য সাধারণ মানুষকে স্নাতক হতে হয়, তারপর B.Ed, তারপর প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা, তারপর ইন্টারভিউ, তারপর রাজনীতির চাপে ঠেলে দেওয়া হয় একপাশে।

কিন্তু রিঙ্কু? তিনি সরাসরি নিয়োগ পেয়েছেন। মাসে প্রায় ৭০ থেকে ৯০ হাজার টাকা বেতন, সঙ্গে সরকারি বাংলো, ভাতা, সুযোগ সুবিধার ঝুলি। অথচ কোনও গ্র্যাজুয়েশন নয়, কোনও ট্রেনিং নয়, স্কুলে পড়াও হয়নি বছর দশেক!

সরকার বলছে, নিয়মের মধ্যেই নিয়োগ—‘International Medal Winner Direct Recruitment Rules 2022’ অনুযায়ী। অর্থাৎ যিনি আন্তর্জাতিক পদকজয়ী, তাঁকে চাকরি দিতে পারবে সরকার। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে—তাহলে শিক্ষার দফতরই কেন? ক্রীড়া মন্ত্রক কি ফাঁকা ছিল?

আরও শর্ত আছে। বলা হয়েছে, রিঙ্কুকে আগামী সাত বছরের মধ্যে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করতে হবে। কিন্তু ততদিনে তিনি যদি জেলার শিক্ষা-পরিকাঠামোই ঠিক করে ফেলেন, তখন কে দায় নেবে?

সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই প্রতিবাদের ঝড়। কেউ লিখেছেন, “যার হাতে বই থাকবার কথা, সেই বসে থাকছে টেবিলের অন্য পাশে!” কেউ কটাক্ষ করে বলেছেন, “বই না পড়ে ব্যাট ধরলেই এখন পেনশনসহ সরকারি চাকরি মেলে!”

শুধু রিঙ্কু নন, উত্তরপ্রদেশ সরকার আরও ছয়জন ক্রীড়াবিদকে সরকারি উচ্চপদে বসাতে চলেছে। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ নিজে ঘোষণা করেছেন, এটাই তাঁদের স্বীকৃতি।

তবে বিরোধীদের প্রশ্ন, এ স্বীকৃতি না সুবিধা? জনগণের টাকায় বেতন দিয়ে পদক্ষেপ কি সত্যিই ন্যায্য? শিক্ষার মতো গুরুতর বিভাগে ‘শিক্ষাহীন’ নিয়োগের বার্তা কী?

রিঙ্কুর সাফল্যে কেউ খুশি, কেউ ক্ষুব্ধ—কিন্তু সবচেয়ে বড় প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে—

এই শিক্ষাব্যবস্থা কাদের হাতে?


Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *