বাঘ, চিতা, হরিণ, বন্য শূকর— একের পর এক বন্যপ্রাণীর মৃত্যুতে বিপর্যস্ত মহারাষ্ট্রের জঙ্গল। মাত্র চার মাসে মৃত্যু হয়েছে ২২টি বাঘ ও ৪০টি চিতার। পাশাপাশি নিধন হয়েছে আরও ৬১টি অন্যান্য বন্যপ্রাণ। শুক্রবার বিধানসভায় ভয়াবহ এই তথ্য তুলে ধরলেন রাজ্যের বনমন্ত্রী গণেশ নায়েক।
সরকারি রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত যে ২২টি বাঘের মৃত্যু হয়েছে, তার মধ্যে ১৩টি মারা গিয়েছে প্রাকৃতিক কারণে। ৪টি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে, আর ৪টি প্রাণ হারিয়েছে দুর্ঘটনায়— কেউ পড়েছে কুয়োয়, কাউকে পিষেছে ট্রেন বা গাড়ি। একটি বাঘের মৃত্যুর কারণ আজও অধরা।
চিতার মৃত্যুর চিত্র আরও উদ্বেগজনক। ৮টি মারা গিয়েছে স্বাভাবিকভাবে, ২০টি দুর্ঘটনায়। চোরাশিকারিদের হাতে খুন হয়েছে ৩টি চিতা। বাকি ৯টির মৃত্যুর পেছনে কী কারণ, তা এখনও অজানা।
অন্যদিকে, এই চার মাসে আরও ৬১টি বন্যপ্রাণের মৃত্যু নথিভুক্ত হয়েছে— যার মধ্যে রয়েছে হরিণ, বনরুই, বনবিড়াল প্রভৃতি। এর মধ্যে ২৪টি প্রাণীকে মেরে ফেলেছে রাস্তার কুকুর। চোরাশিকার এবং বৈদ্যুতিক শকে প্রাণ হারিয়েছে আরও কয়েকটি। প্রায় ২১টি প্রাণীর মৃত্যুর কারণই অধরা।
সবচেয়ে আতঙ্কের তথ্য— এই সময়েই নাসিক জেলায় বন্যপ্রাণীর আক্রমণে মৃত্যু হয়েছে ২১ জন সাধারণ মানুষের। প্রশ্ন উঠছে, কার সুরক্ষা আগে— মানুষ না প্রাণী?
রাজ্য সরকার বলছে, পদক্ষেপ চলছে। প্রতিটি জেলায় গঠন করা হয়েছে বাঘ সংরক্ষণ কমিটি। অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ বা ফাঁদ পেতে বন্যপ্রাণ মারলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তবে আরও এক রিপোর্টে বনদফতর জানিয়েছে, ২০২২ সাল থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে মহারাষ্ট্রে মৃত্যু হয়েছে ১০৭টি বাঘ এবং ৭০৭টি বন্যপ্রাণীর।
প্রশাসনের আশ্বাস থাকলেও প্রশ্ন উঠছে, কতটা ফলপ্রসূ সেই ব্যবস্থা? আর কত প্রাণ গেলে নড়বে সিস্টেম?