আর জি কর অভয়া কাণ্ডে, সিবিআই এর তদন্ত ও চার্জশীট বড় প্রশ্নের মুখে।ঘটনার দিন নমুনা সংগ্রহ থেকে আরম্ভ করে,সবই প্রশ্নের মুখে।খুনের সঙ্গে জড়িয়ে কারা?প্রশ্ন দানা বাঁধছে।

Spread the love

আরজি কর হাসপাতালে মহিলা ডাক্তারের ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে। ঐ ঘৃণ্য অপরাধে শিয়ালদা আদালত সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করেছে। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা। অনাদায়ে আরো ৬ মাস জেলে খাটার নির্দেশ দিয়েছে।
তার পরেই রাজ্য এবং সিবিআই যৌথভাবে হাইকোর্টে জোর সওয়াল করে, সঞ্জয়ের সর্বোচ্চ সাজার দাবীতে। অর্থাৎ যাবজ্জীবনের পরে সর্বোচ্চ সাজা অর্থাৎ ফাঁসির সাজা।
কিন্তু প্রশ্ন, শিয়ালদা আদালত সঞ্জয়কে ফাঁসির সাজা শোনাল না কেন? আদালতে সিবিআই তাদের চার্জশীটে যে সমস্ত তথ্য জমা দিয়েছিল। সে গুলো বেশির ভাগটাই ত্রুটিপূর্ণ এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলেই মনে করছে আইনগজ্ঞ মহল।
প্রথম প্রশ্ন, ঘটনার দিন রাতের খাবার খাওয়ার ঠিক পরেই অভয়ার ধর্ষণ এবং খুন হয়েছিল। সেই সময়টা এখন পর্যন্ত কারো কাছে স্থির ভাবে জানা যায়নি। দেহ পাওয়া গেছিল সেমিনার রুমে। ফরেনসিক ল্যাবরটরি রিপোর্টকেই হাতিয়ার করে সিবিআই আদালতে জানিয়েছে, ওই সেমিনার রুমে যেতে গেলে নার্সিং স্টেশন অর্থাৎ আরজিকর হাসপাতালে ইমার্জেন্সি বিল্ডিং নার্সদের ঘর পেরিয়ে যেতে হয়।
সঞ্জয়ের আইনজীবী সৌরভ ব্যানার্জি। তিনি বলেন, নির্যাতিতার গলার কাছে একটি কামড়ের দাগ ছিল। সেই কামড়ের দাগ কিংবা সেখান থেকে লালা ,কোন কিছুই ফরেনসিক ল্যাবরেটরী কিংবা ময়নাতদন্তের ডাক্তার বাবু সেটির নমুনা সংগ্রহ করেননি। যদি নমুনা সংগ্রহ করত ,তাহলে যে ব্যক্তির কামড় ছিল। সেই ব্যক্তি দাঁতের গঠন জানা যেত। অন্যদিকে নির্যাতিতার স্তন বৃন্তে একাধিক ব্যক্তির লালার নমুনা পাওয়া গেছিল । সেই লালার সঙ্গে সঞ্জয়েরও লালার মিল ছিল। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা নির্যাতিতার বুকের থেকে সঞ্জয়ের চুলের নমুনা সংগ্রহ করেছিল। সেই চুলের ডিএনএ পরীক্ষা করে সঞ্জয়কে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। অন্যদিকে আর কার কার লালা রস নির্যাতিতার স্তনে পাওয়া গেছিল? সে রকম কাউকে খোঁজ করেনি সিবিআই।
সঞ্জয়ের মোবাইলের হেড ফোনের যে টুকরোর কথা উল্লেখ রয়েছে। সেটি পাওয়া গেছিল কার্পেটের নিচে। আইনজীবী সৌরভ বাবু দাবি করেন ,যদি কোন মহিলাকে সঞ্জয় জোর করে ধর্ষণ এবং খুন করতে যায় ।তাহলে তার সঙ্গে সে সময় রীতিমতো ধস্তাধস্তি হয়ে ছিল। ঐ সময় কোন আসামী, সে তার হেডফোনটি ঘটনাস্থলে কার্পেটের নিচে লুকিয়ে আসবে না নিশ্চিত। সৌরভ বাবু আরো বলেন , আসামী সঞ্জয় সিঁড়ি দিয়ে উঠছিল সিসি ক্যামেরাতে দেখা গেছিল। সে যে সেমিনার রুমে গেছিল কিনা ! তার কোন প্রমাণ পাওয়া যায় নি।


তিনি আরো বলেন ,যদি সেমিনার রুমে গিয়ে থাকে। তাহলে তাকে নার্সিং স্টেশন পেরিয়ে যেতে হয়ে ছিল। সেই নার্সিং স্টেশন পেরিয়ে যেতে গেলে, নিঃসন্দেহে নার্সদের চোখের সামনে দিয়েই সঞ্জয় গেছিল। সেমিনার রুমের মধ্যে ধস্তাধস্তি হল। ল্যাপটপ থেকে মোবাইল সব ঠিকঠাকই থাকল।ওটার মধ্যে তার সন্দেহ রয়েছে। এতকিছুর পরও ,সেই সময়কার ডিউটি রত নার্সদের ডেকে কেন জিজ্ঞাসাবাদ করা হল না?তাদের কোন বয়ান রেকর্ড করা হল না? সেটাই জানতে চাইছে সবাই।
অন্যদিকে, নির্যাতিতার হাতের নখে যে রক্তের চিহ্ন পাওয়া গেছিল। সেটি নির্যাতিতার রক্ত ছিল বলে রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে। সঞ্জয়ের শরীরে কোন আঁচড় কিংবা ক্ষতের দাগ পাওয়া যায়নি। তিনি আরো উল্লেখ করেন, নির্যাতিতার যোনিতে কোন বীর্য্য পাওয়া যায় নি। ধর্ষণ হয়েছে সেটার উল্লেখ রয়েছে ময়নাতদন্তে রিপোর্টে। ধর্ষণ কিভাবে হয়েছিল? সেটার বিস্তর উল্লেখ নেই।
এত কিছুর পর, বারবার ধরে একটা প্রশ্ন উঠে আসছে, নির্যাতিতাকে ধর্ষণ এবং খুন কোথায় করা হয়েছিল?সেটা নিয়ে ধোঁয়াশা থেকেই গেছে।
যেহেতু ওই অপরাধের সঙ্গে একাধিক ব্যক্তির যোগ পাওয়া গেছে। এখনো পর্যন্ত তাদের সঠিক খোঁজ খবর না করে ,কেন সঞ্জয়কে আগে থেকে যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হল?সেটা নিয়েই প্রশ্ন তুলছে সাধারণ মানুষ।
আন্দোলনকারীরা প্রথম থেকেই দাবী করে আসছিল ,আরজি করের ডাক্তার খুন এবং ধর্ষণের ঘটনায়,একাধিক ব্যক্তি জড়িয়ে রয়েছে। কাদের বাঁচাতে তদন্ত আর এগোল না। ময়নাতদন্তে অনেকটাই গাফিলতি ছিল বলে মনে করছে আইনগজ্ঞ মহল।
শুধু এবার দেখার, হাইকোর্টে সঞ্জয়ের শাস্তি সর্বোচ্চ হয় ?না, আরো লঘু হয়ে যায়!এই ঘটনাকে সবাই, গভীর রাজনৈতিক যৌথ ষড়যন্ত্রের আভাস পাচ্ছে।


Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *