রক্তিম ওঝা:শুধুমাত্র একটি চাবি হারানোর দায়ে ঘর ছাড়া হতে হলো সত্তরোর্ধ্ব এক বয়স্ক দম্পতিকে । গড়িয়া ষ্টেশন এলাকায় আনন্দ এপারমেন্টের ঘটনা এটি । গত দশ থেকে বারো বছর ধরে এই দম্পতি কেয়ারটেকার হিসেবে কাজ করছে এই অ্যাপার্টমেন্টটিতে।
দম্পতির সাথে কথা বলে জানা গিয়েছে মিটার বক্সের চাবি হারানো নিয়ে এই ঘটনার সূত্রপাত। বৃদ্ধ বৃদ্ধা সিঁড়ি পরিষ্কার করা,ঝাঁট দেওয়া, সময় মত আলো জালানো,ও সর্বক্ষণ কাজে লোক হিসাবে কাজ করত।বিনিময়ে মাসে চার হাজার টাকা বেতন দিত তাদের। স্ত্রী কাঞ্চন মন্ডল, তিনি বাইরে দু-একটি কাজও করতেন। এই ভাবেই দম্পতির জীবন যাপন চলত। ঐ দিন মিটার বক্সের চাবি হারানোকে কেন্দ্র করে এই ঘটনার সূত্রপাত। গতকাল রাতে অ্যাপার্টমেন্টের বাসিন্দারা তাদের ঘর থেকে বার করে দেয়। দম্পতি তাদেরকে রাতটুকু থাকতে দেওয়ার অনুরোধ জানালেও তাদেরকে সেই মুহূর্তে ঘরের সমস্ত আসবাব পত্র নিয়ে ঘর থেকে বের করে দেয় বলে অভিযোগ। রাত্রেবেলা নরেন্দ্রপুর থানা থেকে দুজন পুলিশ কর্মী গিয়ে দম্পতিকে রাত্রি টুকু থাকতে দেওয়ার অনুরোধ করলেও পুলিশ চলে যাওয়ার পর জোরপূর্বক তাদের আবার বের করে দেওয়া হয়, রাতটুকু থাকতে দিতে বললেও অ্যাপার্টমেন্টের বাসিন্দারা তাদের রাস্তায় বার করে দেন।
এই মুহূর্তে দম্পতি কোন রকমে ফুটপাতের পাশে একটি একটি ছাউনি দেওয়া জায়গায় কোনরকমে আছেন। দম্পতিরা জানায় কিছুদিন আগে পাড়ার ছেলেদের চা দেওয়া নিয়েও অসন্তোষ জানিয়ে ছিল এপার্টমেন্টের বাসিন্দারা।
নিরুপায় দম্পতির বাসস্থান এখন রাস্তার পাশের ফুটপাত । দম্পতি মাত্র চার হাজার টাকা বেতন পেলেও ঘর থেকে বের করে দেওয়ার আগে, তাদের প্রাপ্য বকেয়া পারিশ্রমিকটাও দেয়নি বলে অভিযোগ, ওই দম্পতি বৃদ্ধ বৃদ্ধার। বৃদ্ধ জানায় এপার্টমেন্টে এর বাসিন্দাদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো থাকলেও তাদের হঠাৎই এরম আচরণ মানসিক অস্বস্তিতে ফেলেছে ওই দম্পতি বৃদ্ধ বৃদ্ধাকে । তারা রীতিমতো অসুস্থ বোধ করছে। অমল বাবু জানান তিনি অসুস্থ তার উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে। শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লেও ওই বিল্ডিং এর কোন আবাসিক, তাদের এখনো কোনো খোঁজ নেয়নি। নিঃস্ব অসহায় দম্পতির বকেয়া টাকা না দেওয়ার ফলে রীতিমত আর্থিক বিপদে পড়েছে তারা ।স্থানীয় কয়েক জনের সহায়তায় তাদের দুপুরের খাওয়াটুকু জুটেছে আজ।