এখনো পর্যন্ত বাবুকে সন্তুষ্ট করতে গিয়ে কন্ডম ছাড়াই বাবুর শারীরিক চাহিদা মেটাতে হয় সোনাগাছির যৌনপল্লীর যৌন কর্মীদের। আর এ থেকেই রীতিমত অনেকটাই শঙ্কিত যৌনকর্মীদের চিকিৎসকরা। তাদের মতে, মহিলাদের সাদাস্রাব হয়। সেই সাদা স্রাব দু’ ধরনের হয়। একটি সাধারন উপায় নির্গত হয়। আরেকটি ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশনে নির্গত হয়। চিকিৎসকদের মূলত দুশ্চিন্তায় ফেলছে ব্যাকটেরিয়াল সাদা স্রাব। এই সাদা স্রাব থেকে নানা ধরনের যৌন ঘটিত রোগ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। এই বিষয়ে যৌন কর্মীদের সংগঠন ‘দুর্বার মহিলা সমন্বয় সমিতি’র সম্পাদক বিশাখা লস্কর জানান। কনডম ছাড়া যৌনকর্মীদের অনেক সময় বাবুদের সঙ্গে শারীরিক সংসর্গ করতে বাধ্য হয়।
বিশাখা জানান, যৌনপল্লীতে এক একটি যৌনকর্মী একাধিক বাবু থাকে। ওই বাবুরা ,তাদের ভালো বাসার জনকে বিভিন্ন ভাবে আর্থিক কিংবা কোন জিনিস মূল্যবান জিনিস দিয়ে সন্তুষ্ট করে। যেহেতু, একজন বাবু যৌন কর্মীদের আর্থিক চাহিদার সমস্ত মেটাতে পারেনা। তাই যৌন কর্মীরা একাধিক বাবু রাখে। বেশিরভাগ বাবু কোন সুরক্ষা ছাড়াই মহিলার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করে। যার ফলে, ব্যাকটেরিয়া জাত জীবাণু শরীরের মধ্যে প্রবেশ করে। সেটা থেকেই জটিল রোগের সৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে।
চিকিৎসকদের মতে এই ধরনের আচরণ চলতে থাকলে ভবিষ্যতে ওই মহিলাদের যৌন ঘটিত রোগের দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সব থেকে বেশি থাকে। এই সুরক্ষা ছাড়া নীতি শুধু যে কলকাতার সোনাগাছিতে ,তা নয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের যৌনপল্লী গুলোতে একই ধরনের আচরণ চলে আসছে।
যৌনকর্মীদের একাধিক বাবু কেন?
উত্তর খুঁজে এরকমই পাওয়া গেল। একজন যৌনকর্মী যখন যৌন পল্লীতে আসেন। তখন তার পেছনের ফেলে আসা জীবনের অনেককেই আর্থিক ভাবে টানতে হয়। কল্পনা (ছদ্ম নাম)। তিনি জানাচ্ছিলেন। তার স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করার পর, তিনি বাড়ি ছেড়ে সন্তানদের নিয়ে ওখানে ওঠেন। কিন্তু এই পরিবেশে কল্পনা ছেলে-মেয়েদের রাখতে চান নি। তাই স্বামীর কাছে দুটি সন্তানকে বুঝিয়ে রেখে দিয়েছন। তবে সেই দুটি সন্তানকে মানুষ করবার জন্য প্রতিমাসে ১২০০০ টাকা করে পাঠাতে হয় ।সেই টাকাটা স্বামী এসে সোনাগাছির মত যৌনপল্লী থেকে,প্রতি মাসে তার হাত থেকেই নিয়ে যায়।
লিসা (ছদ্ম নাম) জানান। স্বামী তাকে ছেড়ে দিয়ে অন্যত্র চলে গেছে। একটি ছেলে রয়েছে। তাকে ভালো স্কুলে পড়ান। ছেলেটি বাবার বাড়িতেই থাকে। তবে বাবা-মা বৃদ্ধ। তাই মাস গেলে তাদের ১৫ হাজার টাকা পাঠাতে হয়। তারপর তো নিজের খরচা রয়েছে।
মাস গেলে যৌনপল্লীর ঘর ভাড়া নিয়ে সমস্ত কিছু মিলিয়ে এক থেকে দেড় লক্ষ টাকা খরচ হয় ওদের। সেই টাকা তুলতে গিয়ে তিনটে, চারটে, পাঁচটা পর্যন্ত বাবু রাখতে বাধ্য হয়। আর সেই বাবুরা এলে, তারা সব সময় চায় সুরক্ষা ছাড়া সঙ্গম করতে। আর সেটা মেনে নিতে হয় ওই যৌনকর্মীদের। নইলে উপায় নেই।
সেই কারণে ব্যাকটেরিয়াল সাদা স্রাব নিয়ে রীতিমতো চিন্তিত যৌনকর্মীদের ডাক্তারেরা।