নেশামুক্তি নয়, বরং ভয়ঙ্কর ব্যবসার আস্তানা! ঠিক এই ভাষাতেই রাজ্যের বিভিন্ন ডি-অ্যাডিকশন বা নেশামুক্তি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুললেন কংগ্রেস নেতা এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অধীর রঞ্জন চৌধুরী।
তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লেখা এক দীর্ঘ চিঠিতে জানিয়েছেন, এসব রিহ্যাব সেন্টারে মানুষের সঙ্গে পশুর থেকেও খারাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। অভিযোগ, খাবার দেওয়া হচ্ছে নামমাত্র, একসঙ্গে ৪ জনকে নগ্ন করে স্নান করানো হয়, এবং বন্দিদের টয়লেট ব্যবহার করতে দেওয়া হয় মাত্র ৩ ঘণ্টা অন্তর।
চিঠিতে অধীর লিখেছেন, “যাঁরা ‘পানিশমেন্ট রুম’-এ থাকেন, তাঁদের ওপর চলে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। খাওয়ার অভাব, ঘুমনোর পর্যাপ্ত জায়গা নেই, খেতে দেওয়া হয় নোংরা দুর্গন্ধযুক্ত টিউবওয়েলের জল।”
শুধু তাই নয়, এই কেন্দ্রগুলিতে যারা ভর্তি থাকেন, তাঁদের পরিবারের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। দেখা করার জন্য নেওয়া হয় ৪০০ টাকা ‘ফি’। আবার ভর্তি ও ছাড়ার সময় দাবি করা হয় ৮,০০০ টাকা থেকে শুরু করে ৪৭,০০০ টাকা পর্যন্ত।
অধীরের অভিযোগের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর দিক হল—অনেক নির্দোষ মানুষ, যাঁদের কোনও মাদকাসক্তির ইতিহাস নেই, তাঁদেরও ভুলভাল অভিযোগে ধরে পাঠানো হচ্ছে এইসব কেন্দ্রে।
তিনি সরাসরি বহরমপুরের পঞ্চাননতলা এলাকার ‘ডিশা হোম’-এর নাম করে বলেন, এখানেই একাধিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। তাঁর অভিযোগ, পুলিশের কয়েকটি থানার সঙ্গে এই রিহ্যাব সেন্টারগুলির আর্থিক লেনদেন রয়েছে। ফলে যাঁরা এসব চালাচ্ছেন, তাঁরা নিঃসঙ্কোচে টাকা তুলছেন আর নির্যাতন চালাচ্ছেন।
সবশেষে অধীর রঞ্জন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানিয়েছেন, যেন এই সমস্ত অভিযোগের নিরপেক্ষ ও উচ্চপর্যায়ের তদন্ত হয়।
রাজনৈতিক মহলে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে জল্পনা—আসলে কি রাজ্যের ছত্রছায়ায় চলছে এক ভয়ঙ্কর নির্যাতনচক্র?