২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে শিল্প উন্নয়নের উপর জোর রাজ্য সরকারের। সেই লক্ষ্যেই পুজোর পর রাজ্যে আয়োজিত হতে চলেছে এক বিশেষ শিল্প সম্মেলন। মঙ্গলবার এই ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অমিত মিত্র।
বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী যে ‘সিনার্জি কমিটি’র ঘোষণা করেছিলেন, তার বৈঠক ছিল এদিন। সেই বৈঠকের পরই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শিল্প সম্মেলনের কথা জানান অমিত। বলেন, গত তিন মাসে সিনার্জি কমিটির অনুমোদনে রাজ্যে মোট ৩১৬৫টি শিল্প প্রকল্প ছাড়পত্র পেয়েছে। প্রকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে রিয়েল এস্টেট, তথ্যপ্রযুক্তি, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও পর্যটনের মতো ক্ষেত্র।
এখনও পর্যন্ত প্রকল্পগুলিতে সম্ভাব্য বিনিয়োগের নির্দিষ্ট অঙ্ক প্রকাশ না হলেও, সংখ্যার বিচারে তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজ্যের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা।
এই সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, অর্থসচিব প্রভাতকুমার মিশ্র এবং শিল্পসচিব বন্দনা যাদব। অমিত মিত্র জানান, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে যেসব প্রকল্প কর্মসংস্থান তৈরি করবে, রফতানি বাড়াতে সাহায্য করবে, এবং রাজ্যের ভৌগোলিক বা প্রাকৃতিক সুবিধাকে কাজে লাগাবে— সেই ধরনের ক্ষেত্রগুলিকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
সরকার যেসব ক্ষেত্রকে মূল শিল্প লক্ষ্য হিসেবে বেছে নিয়েছে তার মধ্যে রয়েছে—স্টিল, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, চিংড়ি ও মাছ রফতানি, পোলট্রি উৎপাদন, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক পর্যটন, গয়না শিল্প, তথ্যপ্রযুক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, পোশাক, চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং ওষুধ শিল্প।
অমিতের দাবি, রাজ্য থেকে বছরে ৭০ কোটি মার্কিন ডলারের চামড়াজাত পণ্য রফতানি হয়— যা গোটা দেশের এই খাতের মোট রফতানির ৫০ শতাংশ। পাশাপাশি, গত বছরে রাজ্য থেকে ২.০৫ কোটি ডলারের চিকিৎসা সরঞ্জাম ও ওষুধ রফতানি হয়েছে।
তাঁর বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রীর দিকনির্দেশেই এই শিল্প সম্মেলনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পুজোর পর আয়োজিত এই সম্মেলনে রাজ্যের অগ্রাধিকারের শিল্পক্ষেত্রগুলির পাশাপাশি সম্ভাবনাময় অন্যান্য ক্ষেত্র নিয়েও আলোচনা হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০২৬ সালের নির্বাচনের আগে শিল্পায়নের এমন বৃহৎ প্রচেষ্টা রাজনৈতিক বার্তাও দিচ্ছে। বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতেই এই সম্মেলনের আয়োজন বলে মত তাঁদের। মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে রাজ্যের এই শিল্প দিশা রাজ্যের আর্থিক ভিতকে আরও মজবুত করবে বলেই আশা প্রশাসনের।