অবশেষে পৃথিবীর বুকে প্রত্যাবর্তন। টানা ১৮ দিনের মহাকাশ অভিযান শেষে নিরাপদে ফিরে এলেন ভারতীয় বায়ুসেনার উইং কমান্ডার শুভাংশু শুক্লা ও তাঁর তিন সঙ্গী নভশ্চর। সোমবার ভারতীয় সময় বিকেল ৩টা নাগাদ প্রশান্ত মহাসাগরের জলে সফলভাবে অবতরণ করে স্পেসএক্সের ‘গ্রেস ড্রাগন’ ক্যাপসুল। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (ISS) থেকে আনডক করার প্রায় ২২ ঘণ্টা পর এই সফল স্প্ল্যাশডাউনকে কেন্দ্র করে উচ্ছ্বাস ছড়িয়েছে গোটা দেশে।
নাসা ও অ্যাক্সিয়ম স্পেসের যৌথ মিশনে অংশ নিয়েছিলেন চারজন—ভারতের শুভাংশু শুক্লা, মার্কিন মহাকাশচারী পেগি হুইটসন, হাঙ্গেরির টিবার কাপু এবং পোল্যান্ডের স্লাওয়োস উজনানস্কি। তাঁদের এই অভিযান শুধুই প্রতীকী ছিল না, বরং আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণায় নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। মোট ৬০টিরও বেশি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা করে ফিরেছেন তাঁরা। মহাশূন্যে মানুষের শরীর, জৈব প্রযুক্তি, স্টেম সেল রিসার্চ—বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই গবেষণা ভবিষ্যতের মহাকাশ অভিযানের পথপ্রদর্শক হতে চলেছে।
স্প্ল্যাশডাউনের পর পরই উদ্ধারকারী দল পৌঁছে যায় ক্যাপসুলের কাছে। ধাপে ধাপে শারীরিক পরীক্ষা করে একে একে বের করে আনা হয় চার নভশ্চরকে। পরবর্তীতে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে মূল ঘাঁটিতে, যেখানে বিশদ রিহ্যাব ও মানসিক বিশ্লেষণ চলবে।
উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ের বাসিন্দা শুভাংশু শুক্লা এই মিশনে অংশ নিয়ে হয়ে উঠেছেন ভারতের গর্ব। গগনযান মিশনের আগে এ এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত বলেই মনে করছেন মহাকাশ গবেষণার সঙ্গে যুক্ত বিশেষজ্ঞরা। কারণ, এই প্রথম কোনও ভারতীয় নভশ্চর আইএসএসে থেকে আন্তর্জাতিক গবেষণার অংশ হলেন।
স্পেসএক্স ও নাসা এই মিশনকে চিহ্নিত করেছে ‘সম্পূর্ণ সফল’ বলে। ভারতীয় বায়ুসেনা এবং ISRO-র তরফেও শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে শুভাংশুকে। ইতিমধ্যেই রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী-সহ একাধিক নেতা শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তাঁর এই সাহসিকতাকে।
এই মিশনের সাফল্য ভবিষ্যতের জন্য আশার আলো। ভারত যখন নিজস্ব ক্রু মিশন গগনযান চালু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন শুভাংশুদের এই মহাকাশ যাত্রা ভারতের জন্য এক ঐতিহাসিক অধ্যায় হয়ে থাকল।