নীল গ্রহে ফিরছেন শুভাংশুরা, ১৪ জুলাই ফেরার দিন জানাল নাসা

Spread the love

মহাকাশে পাঠানো হয়েছে ভারতের গর্ব শুভাংশু শুক্লাকে। তাঁর এই ঐতিহাসিক সফর ধরা পড়েছে আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রের অলিন্দে। দীর্ঘ প্রায় দুই সপ্তাহ সেখানে কাটিয়ে এবার পৃথিবীতে ফিরে আসার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। নাসার তরফে জানানো হয়েছে, ১৪ জুলাই আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্র থেকে আনডকিং করবেন শুভাংশুরা। এরপর ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই পৃথিবীর দিকে রওনা হবে তাঁদের যাত্রা। আনুমানিক ১৭ ঘণ্টা পর তাদের মহাকাশযান যুক্তরাষ্ট্রের কোনও নির্দিষ্ট অঞ্চলে অথবা প্রশান্ত মহাসাগরে স্প্ল্যাশডাউন করবে।

২৫ জুন মহাকাশযাত্রা শুরু হয়েছিল। ২৬ জুন সন্ধ্যার দিকে ড্রাগন ক্যাপসুল পৌঁছে যায় মহাকাশ কেন্দ্রে। এরপর থেকে শুভাংশুরা অংশ নিয়েছেন একাধিক গুরুত্বপূর্ণ গবেষণায়। জানা যাচ্ছে, তাঁরা প্রায় ৬০টিরও বেশি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। গবেষণার বিষয়বস্তু ছিল মহাকাশে কোষের আচরণ, পেশির বৃদ্ধি, টার্ডিগ্রেড নামক ক্ষুদ্র প্রাণীর অভিযোজন ক্ষমতা এবং সায়ানোব্যাক্টেরিয়ার প্রয়োগ নিয়ে। এই গবেষণাগুলি ভবিষ্যতে মানুষের দীর্ঘমেয়াদি মহাকাশ বাসস্থান এবং চন্দ্র বা মঙ্গল অভিযানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

ISS-এর কুপোলা অংশ থেকে শুভাংশু পৃথিবীর একাধিক দুর্লভ ছবি পাঠিয়েছেন। পৃথিবীর উপরে ভেসে থাকা সাদা মেঘ, তার গা ঘেঁষে থাকা গভীর নীল রং, সব মিলিয়ে এক অপার্থিব সৌন্দর্যের দৃশ্য। ওই ছবি দেখে আপ্লুত হয়েছেন নেট নাগরিকরাও। মহাকাশ থেকে প্রতিদিন ১৬ বার সূর্যোদয় দেখার অভিজ্ঞতা হয়েছে তাঁর। প্রায় ১০০ লক্ষ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে, ২৩০ বার সূর্যোদয়ের সাক্ষী থেকেছেন শুভাংশুরা। প্রতিটি মুহূর্তেই তাঁরা যুক্ত ছিলেন আন্তর্জাতিক গবেষণা ও পর্যবেক্ষণের কাজে।

নাসার তরফে জানানো হয়েছে, ১৪ জুলাইয়ের আগে আনডকিং সম্ভব নয়। কারণ এই সময়ের মধ্যে উপযুক্ত কক্ষপথ তৈরি হবে, যাকে বলা হয় ‘হাই-বিটা’ অরবিট। এই সময়ে সূর্য আলোর উপস্থিতি বেশি থাকে, ফলে স্পেস স্টেশনের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ এবং বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় চাপ পড়ে। তাই ফেরার সময়েও অতি সূক্ষ্মভাবে সব দিক বিচার করে সময় নির্ধারণ করা হয়।

তাঁর সঙ্গে রয়েছেন আমেরিকার পেগি হুইটসন, পোল্যান্ডের স্লাওস উজনানস্কি ও হাঙ্গেরির টিবর কাপু। এই মিশন শুধু ভারতের নয়, গোটা পৃথিবীর জন্যই এক নতুন দিশা দেখিয়েছে। দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে উৎসাহও প্রবল। শুভাংশুর ফিরে আসার অপেক্ষায় গোটা দেশ এখন সময় গুনছে।

মহাকাশের গভীর থেকে ফিরে এসে আবার এক নতুন ইতিহাস রচনা করবেন তিনি, এমনই আশায় বুক বেঁধেছেন তাঁর পরিবার, সহকর্মী এবং দেশবাসী। ১৪ জুলাইয়ের সেই মাহেন্দ্রক্ষণ এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।


Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *