‘‘আমি বাঙালি, তাই কি অপরাধী?’’
ভিনরাজ্যে বাংলাভাষীদের হেনস্তা যেন আজ বর্ণবাদেরই নতুন মুখ। কখনও দিল্লির গলিতে, কখনও ওড়িশার শহরতলিতে, কখনও বিহারের হাটে—বাংলা বললেই কটূক্তি, কখনও আবার বিদ্যুৎ সংযোগ কাটা, জল বন্ধ, এমনকি ‘বাংলাদেশি’ অপবাদ!
এই অপমান আর মুখ বুজে সহ্য নয়—ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বাংলার ভাষা, পরিচয়, মর্যাদা ও অধিকার রক্ষায় এবার রাজপথে নামছে তৃণমূল। আগামী ১৬ জুলাই কলকাতার কলেজ স্কোয়ার থেকে ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত পথে হেঁটে প্রতিবাদ জানাবেন খোদ মমতা। এই লড়াই কেবল রাজনীতির নয়, আত্মপরিচয়ের।
রাজ্যজুড়ে একযোগে প্রতিবাদ—হাওড়া, দমদম, সল্টলেক, ভাঙড়-সহ একাধিক শহরে দুপুর ২টো থেকে ৪টে পর্যন্ত কর্মসূচি পালিত হবে। দিল্লিতেও পথে নামবে তৃণমূল।
তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, শুধু বাংলায় কথা বলার জন্য একের পর এক বাঙালিকে হেনস্তা করা হচ্ছে। এ দেশের মাটিতে নিজের মাতৃভাষায় কথা বলাই কি অপরাধ? বিদ্যুৎ ও জলের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে মানুষের নাগরিক অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া হচ্ছে শুধু ভাষার ভিত্তিতে!
প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য স্পষ্ট ভাষায় বলছেন, ‘‘এ এক নতুন প্রকার এনআরসি আতঙ্ক। মুখে কিছু না বললেও কাজে বাঙালিদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক বানানোর চক্রান্ত চলছে।’’
বিজেপি যদিও এই আন্দোলনকে ‘ভোটের আগে নাটক’ বলে ব্যাখ্যা করছে, তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন—“বাংলা শুধু আবেগ নয়, অস্তিত্বও। আমরা মাথা উঁচু করে বলব—হ্যাঁ, আমি বাঙালি!”
১৬ জুলাই শুধু মিছিল নয়, এ এক সাংস্কৃতিক বিদ্রোহ। বাঙালির স্বর উঠে আসবে কলকাতার রাজপথে—নিজের ভাষা, নিজের পরিচয়ের সম্মানে।