কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর সঙ্গে স্বাধীন ভারতের প্রথম উপপ্রধানমন্ত্রী সরদার বল্লভভাই পটেলের মতবিরোধ ছিল বলে মন্তব্য করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একটি সরকারি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মোদী জানান, দেশ বিভাগের পর দেশীয় রাজ্যগুলিকে একত্রিত করার ক্ষেত্রে পটেল যে দক্ষতা ও দৃঢ়তা দেখিয়েছিলেন, তা যদি কাশ্মীর ইস্যুতেও প্রয়োগ করতে দেওয়া হতো, তাহলে ভারতের ইতিহাস হয়তো ভিন্ন হতো।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার সময় ভারতের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল দেশীয় রাজ্যগুলিকে ভারতের অন্তর্ভুক্ত করা। এই কঠিন কাজটিই দৃঢ় নেতৃত্ব এবং কার্যকর কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে সম্পন্ন করেছিলেন পটেল। কিন্তু, কাশ্মীরের বিষয়ে তাকে সম্পূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। মোদীর মতে, এটি ছিল এক ঐতিহাসিক ভুল সিদ্ধান্ত, যার জন্য ভবিষ্যতে দেশকে দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাস ও বিভাজনের মূল্য চুকাতে হয়েছে।
মোদীর এই মন্তব্য রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। বহু বিশ্লেষক মনে করছেন, এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে মোদী আবারও একটি ঐতিহাসিক বিতর্ককে সামনে আনলেন, যেখানে পটেলকে তুলে ধরা হলো এক বলিষ্ঠ রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে, আর নেহরুকে চিহ্নিত করা হলো এক অতিমাত্রায় আদর্শবাদী এবং কূটনৈতিকভাবে সংবেদনশীল নেতা হিসেবে।
বিজেপি দীর্ঘদিন ধরেই বলে এসেছে, কাশ্মীর ইস্যু জাতিসংঘে তোলার সিদ্ধান্ত ছিল এক বড় ভুল, যার জন্য ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে এই সমস্যা আন্তর্জাতিক হয়ে পড়ে। মোদীর বক্তব্য সেই দীর্ঘদিনের দলীয় অবস্থানকেই আরও জোরালো করল বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মত।
এই বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে আবারও স্পষ্ট হলো যে, বর্তমান সরকার ইতিহাসের এক বিকল্প পাঠ গড়ে তোলার চেষ্টা করছে, যেখানে সরদার পটেলকে শুধুমাত্র “লৌহপুরুষ” হিসেবে নয়, বরং এক দূরদর্শী রাষ্ট্রনায়ক হিসেবেও প্রতিষ্ঠা দেওয়া হচ্ছে।